হরি ওঁ। আমি বনিতাবীরা চক্র। বাপুজীর ছত্রছায়ায় আমি গত সাড়ে চার বছর ধরে আছি। তার আগে আমি সদগুরু বাপুজী সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তখন আমাদের কেন্দ্রের একজন ভক্ত মহিলা বাপুজীর অভিজ্ঞতা সংকীর্তনের আয়োজন করেছিলেন। সেই সময়ে আমার সদগুরুতত্ত্বের উপর তেমন বিশ্বাস ছিল না। কিন্তু সেই মহিলা আমাকে সেখানে যাওয়ার জন্য জোর করলেন, তখন আমি ভাবলাম যে গিয়েই দেখি না, ব্যাপারটা কী। সত্যি বলতে, সেই দিনগুলোতে বাড়ির বাইরে বেরোনোর কথা ভাবলেই আমার মন ভারী হয়ে যেত। তখন আমি ভাবলাম যে, এই ছুতোয় হলেও আমি অন্তত বাড়ির বাইরে বেরোবো। এছাড়াও সেই মহিলা আমাকে বলেছিলেন যে, আপনি বাপুজীর 'ॐ মনঃসামর্থ্যদাতা শ্রীঅনিরুদ্ধায় নমঃ' এই তারক মন্ত্র জপ করুন এবং যখন মন থেকে আসার ইচ্ছে হবে, তখনই আপনি উপাসনার জন্য আসবেন। আমি ভাবলাম যে উনি যখন এত করে বলছেন, তখন গিয়ে দেখতে তো আর ক্ষতি নেই। আমিও সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা নিয়ে বাপুজীর তারক মন্ত্র জপ করতে লাগলাম এবং উপাসনার জন্যও গেলাম।
যখন আমি উপাসনার জন্য গেলাম, তখন আমার মনে আমার স্বামীর ব্যাপারে একটা বড় চাপ ছিল। আমি যখনই বাইরে যেতাম, তিনি সব সময় ফোন করে জিজ্ঞাসা করতেন যে আমি কোথায় আছি। এর ফলে আমার কোনো স্বাধীনতা ছিল না। মনে ভয় ছিল যে উপাসনার সময় যদি স্বামী বাড়িতে চলে আসেন, বা তাঁর ফোন আসে, তাহলে আমি তাঁকে কী বলবো? কারণ আমি তাঁকে এই কথাটা জানাইনি। কিন্তু দেখতে দেখতে চার শনিবার পার হয়ে গেল। আমি উপাসনার জন্য যেতে থাকলাম, তবুও স্বামীর একবারও আমাকে ফোন আসেনি এবং তিনি জানতেও পারলেন না যে আমি বাড়ির বাইরে আছি। স্বামী বাড়ি ফেরার আগেই আমি বাড়ি ফিরে যেতাম। সত্যি বলতে এমনটা প্রথমবার ঘটছিল যে আমি বাইরে আছি এবং তাঁর ফোন আসেনি। এটা ছিল আমার জন্য বাপুজীর প্রথম অভিজ্ঞতা। তখন আমি মনে মনে ঠিক করলাম যে আমি প্রত্যেক শনিবার বাপুজীর উপাসনায় যাবোই; আর আমি তো কোনো খারাপ কাজ করছি না, একটা পবিত্র কাজই করছি। তাহলে এই পবিত্র কাজটা স্বামীর থেকে কেন লুকাবো? তাই আমি তাঁকে বাপুজী সম্পর্কে বললাম এবং বললাম, 'বাপুজীর উপাসনায় যাওয়া আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। তাই আপনি আমাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দিন।' তখন তিনি খুব চিৎকার-চেঁচামেচি করলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটাও বললেন যে 'তোমার যা করার তা করো।' আমিও সেটাই করলাম, যা আমাকে করতে ছিল; অর্থাৎ উপাসনার জন্য যেতে থাকলাম। ধীরে ধীরে আমার জীবন খুব সহজ হয়ে গেল; এবং আনন্দের কথা তো এটা যে, সময়ের সাথে আমার স্বামীরও বাপুজীর উপর বিশ্বাস জন্মাল। পরে তিনি আমাকে থামানোর কোনো প্রশ্নই রইল না।
আমাদের একটি ৫ বছরের ছেলে আছে এবং দুটি বড় মেয়ে। এরই মধ্যে আমি আবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ দেখতে পেলাম। কিন্তু যখন আমি পরীক্ষার জন্য ডাক্তারের কাছে গেলাম, তখন ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বললেন, 'গর্ভ না গর্ভাশয়ে আছে, না বাইরে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু রিপোর্ট তো বলছে যে আপনি গর্ভবতী।' পুরো সোনোগ্রাফির পর জানা গেল যে বাচ্চাটা নালীর মধ্যে (fallopian tube) আছে। এটা খুবই চিন্তাজনক ব্যাপার ছিল, কারণ ডাক্তার বলেছিলেন যে, যেমন যেমন বাচ্চা বাড়বে, নালী বড় হতে থাকবে এবং একদিন তা ফেটে যাবে, যার ফলে আমার জীবন বিপন্ন হতে পারত। 'কী করা যায়' এই চিন্তা করতে করতে এক মাস কেটে গেল। আমি নিজে এত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে সেই সময় আমার বাপুজীর কথা মনেও আসেনি। কিন্তু আমরা তাঁকে স্মরণ না করলেও বাপু তাঁর ভক্তদের কখনো ভোলেন না। সেই সদগুরুতত্ত্ব তাঁর ভক্তদের পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানেন। আমরা তাঁদের ভুলে গেলেও তাঁরা কোনো না কোনো ভাবে আমাদের তাঁদের কথা মনে করিয়ে দেন।
এই সব চলতে থাকা অবস্থাতেই, আমি একজন এম.ডি. স্পেশালিস্ট ডাক্তারের কাছে গেলাম। তিনিও বললেন, 'অপারেশন তো করতেই হবে। এর বাইরে আর কোনো উপায় নেই।' অপারেশনের জন্য কমপক্ষে ৭০,০০০/- টাকা খরচ হতো। আরও খোঁজ নিয়ে জানা গেল যে সম্পূর্ণ খরচ এক লাখ পর্যন্তও যেতে পারে এবং জীবনের ঝুঁকি তো ছিলই। আমাদের আর্থিক অবস্থাও এত ভালো ছিল না। যখন নিশ্চিত হওয়ার জন্য আবার পরীক্ষা করা হলো, তখন সেই রিপোর্টেও একই কথা আবার বলা হয়েছিল। আমার মেয়ের জন্মদিন কাছে ছিল এবং তার জন্য জামাকাপড় ইত্যাদি কেনাকাটা করতে হতো। কিন্তু বারবার পরীক্ষা করতে হচ্ছিল এবং শেষ রিপোর্ট আনার জন্যও টাকার ব্যবস্থা করতে হতো। তাই জামাকাপড় কেনাটা একটু কঠিন মনে হচ্ছিল। আমার জন্য টেস্টের রিপোর্ট বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টাকার অভাবে প্রশ্ন ছিল যে এখন কী করা যায়? তখন আমার বাপুজীর কথা মনে পড়ল এবং আমি তাঁকে ডাকলাম। সেই দিন খাবার খাওয়ার সময় আমি খুব কেঁদেছিলাম এবং মনে মনে বাপুজীকে বললাম, 'আপনার যা করার তা করুন। আমাকে বাঁচানো বা মারা সম্পূর্ণভাবে আপনার উপর নির্ভর করছে। কিন্তু আমি কোনো অপারেশন করতে পারব না। আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়।' বাপুজীর সাথে এইভাবে কথা বলার পর আমি খুব কাঁদলাম।
পরের দিন শেষ রিপোর্ট আনতে যেতে হতো। আমি মনে সাহস নিয়ে সেখানে গেলাম। সেই রিপোর্টের জন্য সবসময় ৮০০/- টাকা নেওয়া হতো। আমি তাঁদের ১০০/- টাকা আগেই দিয়েছিলাম। আমার টেস্টের রিপোর্ট পুণে থেকে আসছিল। সেই রিপোর্টগুলোতে কখনো টাকা লেখা থাকত না। কিন্তু সেই দিন আমার এই রিপোর্টে শুধু ৩০০/- টাকা নেওয়ার কথা লেখা ছিল। আমি সেই রিপোর্ট নিতে অস্বীকার করলাম, কারণ আমার রিপোর্টের জন্য ৮০০/- টাকা দিতে হতো। তখন সেই সিস্টার সামনে থেকে বললেন, "আপনার কাছে কি টাকা বেশি হয়ে গেছে? আপনাকে শুধু ৩০০/- টাকা দিতে হবে।" হে সদগুরুরায়! আপনার লীলা অপার। আমার বিশ্বাস যে এটা বাপুজীরই লীলা ছিল। তিনি আমার টাকার ব্যবস্থাও করলেন, কারণ এখন বাকি টাকা থেকে আমি মেয়ের জন্য জামাকাপড় কিনতে পারলাম। আমি তাঁদের ৩০০/- টাকা দিয়ে ফিরে আসলাম।
এই অভিজ্ঞতা তো আছেই, কিন্তু এরপর যে ঘটনা ঘটল তা তো যুক্তির বাইরে! রিপোর্টে লেখা ডাক্তারি শব্দগুলো আমার কিছুই মনে আসছিল না। এবং যখন আমি সোনোগ্রাফির রিপোর্ট নিতে গেলাম, তখন সেখানেও আমার কাছ থেকে, সাধারণ ৭০০/- টাকার বদলে ৪০০/- টাকাই নেওয়া হলো। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এখানে অকল্পনীয়, কিন্তু অনুকূল ঘটনা ঘটছিল, কিন্তু আমাদের মনে 'কিন্তু' এবং 'তবে' তো থাকেই। আমার মনে হলো যে আমার রিপোর্টে কিছু গণ্ডগোল হয়েছে হয়তো, তাই তারা শুধু ৪০০/- টাকা নিচ্ছে। কিন্তু তাঁরা বললেন, "আপনার রিপোর্ট খুব ভালো আছে। আপনার কোনো সমস্যা নেই।" আমি আরও অবাক হয়ে গেলাম! ভালো রিপোর্ট?? আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। পরে আমি জানতে পারলাম যে আমি গর্ভবতীই ছিলাম না!!
তাহলে আগের সোনোগ্রাফিতে নালীতে যে জিনিসটা দেখা গিয়েছিল সেটা গেল কোথায়? আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। তাই আমি এক নয়, বরং অনেক ডাক্তারের পরামর্শ নিলাম। সবাই একই কথা বললেন। আমার বাপুজীর এই কেমন অনন্ত লীলা! কোনো রিপোর্ট রাতারাতি কীভাবে বদলে যেতে পারে? পরে, প্রথম সোনোগ্রাফিতে যে জিনিসটা ডাক্তার 'বাচ্চা' মনে করেছিলেন, তার পরিবর্তে কেবল ফাইব্রয়েড (গর্ভাশয়ে বেড়ে ওঠা একটি টিউমারের মতো জিনিস) বলে রোগ নির্ণয় করা হলো। এক মাসের ওষুধে তার চিকিৎসা হয়ে গেল, যার খরচ ছিল মাত্র ১০০০ টাকা। বাপুজী আমার অজ্ঞাতসারে আমার জীবন থেকে এই মারাত্মক জিনিসটা সরিয়ে দিলেন এবং রোগ নির্ণয় হলো শুধু ফাইব্রয়েডের! আমার অভিজ্ঞতা হলো যে যখন কেউ তার জীবনের সমস্ত ভার সদগুরুর উপর অর্পণ করে, তখন তিনি এইভাবে আমাদের জীবন গড়ে তোলেন, যেমনটা তিনি চান। আমার বিশ্বাস যে 'বড় আই' (আই চণ্ডিকা) এবং ড্যাড আমাদের জন্য সবকিছু করতে পারেন এবং আমার বাপুজীই আমাকে বাঁচিয়েছেন। বাপুজীকে অনেক অনেক অম্বজ্ঞ। আজও আমি প্রতিটি মুহূর্তে বাপুজীর অনেক অভিজ্ঞতা পেতে থাকি। বাপুজী আমাদের জীবনে আছেন, শুধুমাত্র এই কারণেই আমরা সমস্ত ভক্ত সত্যিকারের নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছি। সমস্ত চণ্ডিকা কুল অনেক অনেক অম্বজ্ঞ!
॥ হরি: ওঁ। শ্রীরাম। অম্বজ্ঞ।

Comments
Post a Comment